চলচ্চিত্রের দুই তরুণ মুখ ইয়াশ রোহান ও প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। ‘শেষ চিঠি’ নামক একটি ওয়েব ফিল্মে প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধে অভিনয় করেছিলেন তারা। যেটার পরিচালক ছিলেন সুমন ধর। সম্প্রতি এএসপি পলাশ সাহার আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ‘শেষ চিঠি’।
নেটিজেনরা বলছেন, বাস্তব জীবন থেকে গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র বা নাটক তৈরি করা হয় বলেই জানতাম। কিন্তু চলচ্চিত্রের কাহিনী কীভাবে হুবহু পলাশ সাহা আর সুস্মিতা সাহার জীবনের সাথে মিলে গেল সেটা নিয়ে গোলকধাঁধায় আছেন তারা।
শেষ চিঠি’ মূলত প্রেম ও পারিবারিক গল্পকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছিল। যেখানে ইয়াশ রোহানের মায়ের চরিত্রে ছিলেন অভিনেত্রী ‘সাবেরী আলম।
মায়ের অতিরিক্ত ভালোবাসা যে কখনো কখনো সন্তানকে সর্বনাশের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয় সেটাই সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন পরিচালক সুমন ধর।
গল্পের শুরুতেই দেখা যায় ইয়াশের মা সাবেরী আলম তার অল্পবয়সী, বুদ্ধিদীপ্ত পুত্রবধূ দিঘীকে উঠতে বসতে হেনস্তা করছেন। কোনোভাবেই ছেলের বউ হিসেবে মানতে পারছেননা তাকে। কারণ ইয়াশের পরিবার যেখানে মোটামুটি সম্ভ্রান্ত সেখানে দিঘী মাতা- পিতা হারা ছিন্নমূল একজন মেয়ে।
প্রতিনিয়ত এমন অত্যাচার নিপীড়ন সহ্য করেও এই সংসারকে আপন করেই বাঁচতে চান দিঘী।
এদিকে দিঘীর প্রতি ইয়াশের ছিল আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা। স্ত্রী দিঘীকে বার বার তালাক দেওয়ার অপচেষ্টা আর বৃথা অনুরোধে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু মায়ের প্রতি অগাধ সম্মানের কারণে মুখ ফুটে কোনো প্রতিবাদ করেননা তিনি। বরং বউ এবং মা দুজনকেই শান্ত রাখার চেষ্টা করেন।
কিন্তু গল্পের এক পর্যায়ে ইয়াশের মা তার গা ছুঁয়ে কসম নেন যে তার ছেলে যেন স্ত্রী দিঘীকে আগামীকাল সকালের মধ্যে বাসা থেকে বের করে দেয়।
এই পর্যায়ে হতভম্ব হয়ে পড়েন ইয়াশ। মা নাকি বউ কাকে বেছে নেবেন তিনি?
শেষ পর্যন্ত এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেন ইয়াশ। অফিস থেকে ফিরি স্ত্রী দিঘীকে বলেন দুই কাপ কফি তৈরি করে আনতে। খুব উৎসাহ নিয়ে কফি তৈরি শেষে একসাথে বসে কফি খান তারা। এই পর্যায়ে অস্বস্তি বোধ করতে থাকেন দিঘী আর ইয়াশ।
কারণ আগে থেকেই কফিতে বিষ মিশিয়ে রেখেছিলেন স্বামী ইয়াশ।
স্বামীর সাথে মরতে হয়তো দিঘীর কষ্ট হয়নি। কিন্তু পেটে থাকা বাচ্চাটাও তাদের সাথে জলাঞ্জলি গেল এটাই শেষতক দুঃখের সাথে জানালেন ইয়াশকে।
আর এভাবেই শেষ হয়ে গেল ৩ টা নিস্পাপ জীবন।
আবার দিঘীর শাশুড়িও কিন্তু পার পেলেন না। প্রকৃতির প্রতিশোধে তিনিও হলেন মানসিক ভারসাম্যহীন।
কিছুদিন আগে মারা যাওয়া পলাশ সাহার স্ত্রী সুস্মিতা সাহা আর মা আরতী সাহা গণমাধ্যমে যেসকল সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সেটার গল্পও অনেকটা একইরকম। আবার পলাশ সাহার চিঠিতেও প্রকাশ পেয়েছে মা ও বউকে ব্যালেন্স করে চলতে না পারার আক্ষেপ।
বাংলার প্রতিটি ঘরেই হয়তো নিত্য চলছে বউ-শাশুড়ির এই অন্ত:কোন্দল। একজন পুরুষ হিসেবে দুই পক্ষকেই তাদের প্রাপ্য অধিকার প্রদানের দায়িত্বও কিন্তু একান্ত আপনার।