দামেস্ক থেকে পালিয়ে যাওয়া সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এখন মস্কোতে অবস্থান করছেন। রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া আসাদ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিল। আসাদ ও তার পরিবার সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ক্রেমলিনের সূত্র উল্লেখ করে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, মানবিক দিক বিবেচনা করে আসাদ ও তার পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে রাশিয়া।
তাসে আরও বলা হয়েছে, রাশিয়ার কর্মকর্তারা সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে।
এদিকে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘে দেশটির প্রথম উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জানান, সোমবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কূটনৈতিক সূত্রগুলো বৈঠকের সময় নিশ্চিত করেছে। পলিয়ানস্কি বলেন, আসাদ সরকারের পতনের গভীরতা এবং এর প্রভাব রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য কী হতে পারে, তা এখনই বলা কঠিন।
তিনি আরও জানান, গোলান মালভূমির জাতিসংঘ-নিয়ন্ত্রিত নিরস্ত্রীকরণ অঞ্চলে ইসরায়েলের সাময়িক দখল নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, সশস্ত্র বিদ্রোহীদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। গতকাল রবিবার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে রাজধানী দামেস্ক ছাড়েন তিনি। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের শাসনের পরিসমাপ্তি ঘটেছে।
বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন। তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি।
এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল-আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।